আজ ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদু্ন্নবী (সা.)æ
এখন চান্দিনা।। নিউজ ডেস্ক।।
মানব জাতির মহোত্তম পথপ্রদর্শক, নবীকুলশ্রেষ্ঠ হযরত মুহম্মদ (সা.)- এর জন্ম ও ওফাত দিবস। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বের কেন্দ্রভূমি পবিত্র মক্কা নগরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কেবল তাঁর অনুসারীদেরই নন, তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের আদর্শ ও পথপ্রদর্শক। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেছেন, আপনাকে আমি জগৎসমূহের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি। মহানবী (সা.) বিশ্বমানবের সেরা পথপ্রদর্শক, মহান শিক্ষক ও অনুপম আদর্শ। আল্লাহপাক রাসুল (সা.) কে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেছেন। বলেছেন: তিনিই সেই সত্তা যিনি নিরক্ষদের মধ্য থেকে একজন রাসুল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের তার আয়াত পড়ে শুনান, শিক্ষা দেন ও পবিত্র করেন এবং তাদের কিতাব শিক্ষা দেন ও হিকমত তথা জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা দেন। অথচ, ইতোপূর্বে তারা সুষ্পষ্ট গুমরাহিতে নিমজ্জিত ছল। (সুরা জুম্মা)। মানবেতিহাসের এক যুগসন্ধিকালে, অন্ধকারতম সময়ে তিনি মহান আল্লাহর বাণী নিয়ে অবতীর্ণ হন। তার উদাত্ত আহবান, নিষ্ঠাপূর্ণ কর্মসাধনা, উচ্চতম নীতি-আদর্শ ও অমলিন চরিত্র-মাধুর্যের মাধ্যমে তিনি অতি অল্প দিনে এক আলোকোজ্জ্বল ও সর্বোন্নত জীবনব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেন। অজ্ঞানতা, কুসংস্কার এবং অনাচার, পাপাচার ও বিশ্বাসহীনতার কলুষ দূরীভূত করে শান্তি, সভ্যতা, নিরাপত্তা ও মানবিক মর্যাদার এক নতুন পথ রচনা করেন। বিশ্বাস, প্রজ্ঞা ও মানবিক গুণাবলী সমৃদ্ধ নয়া সভ্যতার স্থপতি হিসেবে তিনি কেবল আরবভূমি নয়, গোটা বিশ্বে নন্দিত, প্রসংশিত। মহান আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম ইসলামের বাণীবাহক হিসেবে তিনি শুধু মানুষের ধর্মীয় জীবনেই প্রভাব বিস্তার ও সুনির্দিষ্ট করেননি, বরং মানব জীবনের এমন কোনো দিক-বিভাগ পাওয়া যাবে না, যেখানে তাঁর অনিবার্য প্রভাব প্রতিফলিত হয়নি। তিনি একাধারে একটি ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা, একটি জাতির নির্মাতা এবং একটি অতুল্য সভ্যতার স্রষ্টা। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, সাইয়েদুল মুরসালিন ও খাতামুন্নাবিয়ীন।
রাসুল (সা.)-এর যখন আবির্ভাব হয়, তখন পবিত্র মক্কা নগরীসহ সমগ্র আরব জাহেলিয়াতের মধ্যে নিমজ্জিত ছিল। পৌত্তলিকতা, যুদ্ধ, বিরোধ-বিসম্বাদ, হানাহানি, অবিশ্বাস, সামাজিক অনাচার, কুসংস্কার, বৈষম্য, মানবিক অধঃপতন মারাত্মক পর্যায়ে উপনীত হয়েছিল। তিনি অবনত-অধঃপতিত মানব গোষ্ঠিকে অল্প দিনের ব্যবধানে সৎ, সত্যনিষ্ঠ, মানবিক দায়িত্বশীল, তৌহিদে বিশ্বাসী জাতিতে রূপান্তর করেন। তিনি কেবল মহান আল্লাহপাকের সর্বশেষ কিতাব আল কোরআনের ধারক ও বাস্তবায়নকারীই নন, তাঁর গোটা জীবন ছিল পবিত্র কোরআনের প্রতিরূপ। বিশ্বমানবের মুক্তি, শান্তি, ইহ-পরকালীন মঙ্গল, বিকাশ, নিরাপত্তা-সবকিছুই আসতে পারে পবিত্র কোরআন ও তাঁর জীবনকর্ম অনুসরণ করার মাধ্যমে। তিনি বলেছেন, আমি দুটি বিষয় রেখে গেলাম। যতদিন এ দুটি আঁকড়ে ধরে থাকবে, ততদিন তোমরা পথচ্যুত হবে না। এ দুটি হলো, আল্লাহর কিতাব এবং আমার সুন্নাহ।